যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন শুধু দেশের অভ্যন্তরীণ নীতি নয়, বরং বৈশ্বিক রাজনীতির দিকেও গভীর প্রভাব ফেলে। প্রতিটি নির্বাচন আসলে বিশ্বমঞ্চে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কেমন হবে, তা নির্ধারণে ভূমিকা রাখে।
বিশেষ করে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, গাজা সংঘাত, এবং চীন-তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী নেতৃত্বের নীতিতে অনেক পরিবর্তন আসতে পারে। যেমন, ট্রাম্প নির্বাচিত হলে রাশিয়ার প্রতি নমনীয় নীতি গ্রহণ করতে পারেন, যা ইউক্রেনের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। অন্যদিকে, কমলা হ্যারিস ইউক্রেনের প্রতি আরও সহায়তা জোরদার করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এশিয়াতে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্বও নির্বাচনের ওপর নির্ভরশীল। উদাহরণস্বরূপ, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক চুক্তিগুলো ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে পুনর্বিবেচিত হতে পারে, তবে কমলা হ্যারিস এই নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বের বদলে ইউরোপের সঙ্গেও সম্পর্ক প্রভাবিত হতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিশেষ করে ন্যাটোর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কমলার অধীনে আরও জোরদার হতে পারে। অন্যদিকে, ট্রাম্পের নেতৃত্বে আবারও বাণিজ্যিক দ্বন্দ্ব ও নিরাপত্তা নিয়ে উত্তেজনার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব এবং ইরান, সৌদি আরব, ও ইসরায়েলের সাথে সম্পর্কও নতুন করে গড়ে উঠতে পারে। ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম এবং গাজা পরিস্থিতি সম্পর্কে ট্রাম্প ও কমলার দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ ভিন্ন হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন রাষ্ট্রও এ বিষয়ে সতর্কতার সাথে অপেক্ষায় রয়েছে।
এশিয়ার স্থিতিশীলতায় ভারতের মতো প্রভাবশালী রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কও গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব পরিবর্তনের ফলে নতুন প্রশাসন এই অঞ্চলে শান্তি এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য সামরিক সহযোগিতা ও কৌশলগত অংশীদারিত্বে আরও মনোযোগী হবে বলে বিশ্লেষকদের আশা।